তোমার সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে pen আটকে গেল। কি যে লিখবো, কোথা থেকে যে শুরু করবো, জানি না । হাসির কথা আগে লিখবো, নাকি তোমার নানা কাণ্ডের কথা! তোমার কষ্টের কথা আগে বলবো, নাকি তোমার বহু struggles এর কথ। যেমন মনে আসছে, লিখছি তেমন।
1986 এর April মাস। ২৫-২৬ বয়েসের সেই মঞ্জু পিসি। জানতাম কি সেদিন যে আমাদের গাড়িয়া বাড়ির আনাচে কানাচে তুমি জড়িয়ে থাকবে, আমাদেরই একজন হয়ে! এক ঢাল ঘন কালো চুল, কপালে সেই বড়ো লাল টিপ্, আর তোমার এক মুখ সুন্দর হাসি। দাপিয়ে বেড়ালে সব জায়গা। আমাদের বাড়ি র হাল ধরা তো বটেই, সেই রান্না ঘর থেকে, ছোট মাম এর দেখভাল করা মা যখন স্কুল এ, দিদুন আর মা র থেকে নানান রান্না শেখা, কুট্টুস, মিষ্টি, কোকো আর পরে টফি দের নিজের করে নেয়া। দুষ্টু, চিংড়ি, ছোট্টু, লালি, কালি র সংসারে ঢুকে তাদের আপন করা…কত আর বলব। মনে আছে মঞ্জু পিসি, তুমি নাম রেখেছিলে কার যেন ছানার, মরি!! কেন? “হাড় জিরজিরে চেহারা মরির, বেশি দিন বাঁচবে না”, তাই বলে নাম দিলে মরি!! আর সেই মরি বহু দিন বহাল তবিয়তে বেঁচে ছিল 😁
তোমার সেই এক line এর dialogue “বৌদি, চিন্তা করবেনা না, আমি তো আছি।” কয়েক বছর আগে অবধি এই এক লাইন এর ভরসায়, মা বাবা কত না বেড়াতে গেছে তোমার হাতে বাড়ির চাবি দিয়ে। তোমার সেই হাহাহাহাহা করে হাসি, পাড়া কাঁপিয়ে কথা বলা বা কাউকে ডাকা…ভুলে যাওয়া তো impossible।
আমার অসুখ করলো । কঠিন অসুখ ।তুমি আমার জন্য সেই সময়ে যা করেছিলে, মা আজ ও সেই কথা বলে ।নিজের লোকের জন্য যা করতে, হয়তো তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি করলে আমার জন্য । হ্যা, তুমি বরাবরই আমার ব্যাপারে partial ছিলে, ঠিক। আমার প্রশংসা সবার কাছে হয়তো তুমিই সব চেয়ে বেশি করেছ।
মনে আছে মা একবার বাবা র কাছে নর্থ বেঙ্গল গেলো, আর আমি বাড়িতে ছিলাম। আমরা নতুন রান্না experiment করেছিলাম, বেশ বাজে হয়েছিলো প্রথম বার! তাও কত মজা করে খেয়েছিলাম আমরা 😁 কত ভালো রান্না শিখে গেলে তুমি, বলতে “বৌদি, আপনাদের বাঙাল বাড়ি তে এসেই আমার এত কিছু শেখা” । Expert হয়ে উঠলে রান্নায় তুমি । মা কোনো স্পেশাল রান্না র রেসিপি ভুলে গেলে, তোমাকেই ফোন করে এসেছে “মঞ্জু, বলো তো, কি যেন ছিল?” আর তুমি বলতে “বৌদি, আপনার থেকেই শেখা, আর আপনিই ভুলে যান সব কিছু”।
তোমায় ঘড়ি দেখা শেখান।।। বাপরে, সে এক experience বটে! গত বছর ও যখন তোমায় দেখতে গেলাম, সে কথা আবার বৌদের আর নাতি নাতনি দের বললে! তূণ বাড়ি এলো আর তোমার সেই প্রথম বার অত অসুস্থ্য হওয়া । তূণের লুডো র সাথী তুমি, সারা দুপুর জুড়ে গল্প করার সাথী তুমি, আর মা র শেখানো, তূণের তোমায় “মঞ্জু” বলে ডাকা …কেমন যেন অনেক কিছু এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেল।
আর তোমার গায়ের রং! এটা না লিখলে এই লেখা অসম্পূর্ণ 😊। সারা জীবন ইয়ার্কির subject হয়ে রইলো এবং আজ ও আছে! তূণ কে দেখে আমায় বলেছিলে, “চিন্তা করো না মাম, তোমার মঞ্জু পিসির মতন গায়ের রং হবে না!” Black মানেই মঞ্জু পিসি।তুমি আমার লাইফ এ unit of black. এই লাইন টা লিখছি আর হাসছি।😁
তোমার সেই হাসি, দিদুন এর ঘরে বসে আমার থেকে কত কিছু জানতে চাওয়া, তূণের এর nonstop কথা শুনে হেসে গড়িয়ে পরা আর মা বাবা র কাছে হঠাৎ বিকেলে বেল বাজিয়ে বলা “বৌদি এই নিন গরম সিঙ্গারা”। বলতে না তুমি, “আমি বৌদির আগে চলে গেলে, আমার বৌদি খুব কাঁদবে, কষ্ট পাবে”। শেষ মূহর্ত পর্যন্ত হয়তো তোমার প্রাণ পরে ছিল আমাদের বাড়িতেই, শেষ বারের মতন আসা আর হলো না তোমার দাদা বৌদির কাছে। দাদা বৌদি তোমার কাছে, তোমার কত কষ্টে তৈরী বাড়িতে গেলো, তোমায় শেষ বারের মতন দেখতে। এটা কি ঠিক করলে মঞ্জু পিসি!
তোমার কষ্ট শেষ হলো । আমায় বলতে না তুমি ” মরে গেলে বাঁচি, মাম!” আর আমি বলতাম “অত সোজা!” সেই কঠিন কে সোজা করে “আসি মাম ” না বলেই চলে গেলে তুমি মঞ্জু পিসি। মিশে গেলে মাটির সাথে । শুয়ে থাকো, rest নাও, সারা জীবন প্রচুর প্রচুর খেটেছ, কষ্ট করেছো । সবাই তো আমরা সেখানেই যাবো একদিন । তুমি তাড়াহুড়ো করে গটগটিয়ে হেঁটে, একটু আগেই না হয় পৌঁছে গেলে।